নতুন গৃহকর স্থগিত চেয়ে সিলেটে মানববন্ধন, প্রতিবাদ চলছেই

সিটি করপোরেশনের নতুন করে গৃহকর বৃদ্ধির প্রতিবাদ ও সিদ্ধান্ত প্রত্যাহারের দাবিতে সিলেটের নাগরিকবৃন্দের ব্যানারে মানববন্ধন ও প্রতিবাদ সমাবেশ কর্মসূচি পালন করা হয়। বৃহস্পতিবার বিকেলে সিলেট কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারের সামনে

দলমত–নির্বিশেষে সিলেট নগরের সর্বস্তরের লোকজন নতুন গৃহকর (হোল্ডিং ট্যাক্স) বাতিল চান। এমনটিই দাবি করেছেন সিলেটের প্রগতিশীল রাজনৈতিক দল ও সুশীল সমাজের প্রতিনিধিরা। আজ বৃহস্পতিবার বিকেলে নগরের চৌহাট্টা এলাকায় কয়েক শ মানুষের উপস্থিতিতে মানববন্ধন কর্মসূচি করে তাঁরা এমন দাবি জানান।
এদিকে সিলেট সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী গৃহকর নিয়ে উদ্ভূত পরিস্থিতিতে সংবাদ সম্মেলন করেছেন। তিনিও নতুন গৃহকর বাতিলের দাবি জানিয়েছেন। পাশাপাশি সব শ্রেণি-পেশার নাগরিকদের সঙ্গে আলাপ-আলোচনার ভিত্তিতে নতুনভাবে গৃহকর নির্ধারণের পরামর্শও তিনি সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের দেন।

এর আগে পঞ্চবার্ষিক কর পুনর্মূল্যায়নের পর গত ৩০ এপ্রিল থেকে সিটি করপোরেশন নতুন নির্ধারিত বার্ষিক গৃহকর অনুযায়ী, ভবনমালিকদের গৃহকর পরিশোধের নোটিশ দেওয়া শুরু করে। এরপর নগরের প্রায় পৌনে ১ লাখ ভবনমালিকের গৃহকর ৫ থেকে ৫০০ গুণ পর্যন্ত বাড়ানো হয়েছে বলে অভিযোগ করেন ভুক্তভোগী ব্যক্তিরা। এ নিয়ে নগরজুড়ে ক্ষোভ ও অসন্তোষ দেখা দিয়েছে। এর পর থেকে প্রতিদিন নগরের বিভিন্ন সংগঠন গৃহকর বাতিলের দাবিতে নিয়মিত আন্দোলন ও প্রতিবাদ কর্মসূচি পালন শুরু করে।

আজ বিকেল সাড়ে চারটায় নগরের চৌহাট্টা এলাকায় সিলেট কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারের সামনে ‘সিলেটের নাগরিকবৃন্দ’ ব্যানারে মানববন্ধন ও প্রতিবাদ সমাবেশ শুরু হয়। এতে সিলেটের প্রগতিশীল রাজনৈতিক দলের প্রতিনিধি, সুশীল সমাজ, বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ থেকে শুরু করে ভুক্তভোগী কয়েক শ ভবনমালিকও উপস্থিত ছিলেন। এ সময় বক্তারা ‘সিটি করপোরেশনের আরোপিত লাগামহীন, অযৌক্তিক, অন্যায্য গৃহকর’ বাতিলের দাবি জানান।

মানববন্ধন চলাকালে প্রতিবাদী সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন আয়োজক সংগঠনের আহ্বায়ক ও সিলেট জেলা আইনজীবী সমিতির সাবেক সভাপতি এমাদ উল্লাহ শহীদুল ইসলাম। সভা সঞ্চালনা করেন বাসদ সিলেটের সদস্যসচিব প্রণব জ্যোতি পাল। এতে সমাজের বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার বিশিষ্টজনেরা বক্তব্য দেন। বক্তারা নতুন গৃহকরকে ‘ভৌতিক গৃহকর’ হিসেবে অভিহিত করে বলেন, ১০০ থেকে ৫০০ গুণ পর্যন্ত গৃহকর বাড়ানো হয়েছে। এ তথ্য পাগলেও বিশ্বাস করবে না। অথচ এটাই সত্য।
প্রতিবাদ সমাবেশে বক্তব্য দেন সিপিবি সিলেটের সাবেক সভাপতি বেদানন্দ ভট্টাচার্য, জাসদ সিলেটের সভাপতি লোকমান আহমদ, সাম্যবাদী দলের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক বজ্র গোপাল, গণতন্ত্রী পার্টি সিলেটের সভাপতি মো. আরিফ মিয়া, বাসদ সিলেটের আহ্বায়ক আবু জাফর, ওয়ার্কার্স পার্টি সিলেটের সাধারণ সম্পাদক সিকান্দর আলী, সিলেট জেলা আয়কর আইনজীবী সমিতির সভাপতি মৃত্যুঞ্জয় ধর ভোলা প্রমুখ।