ইয়েমেনে যুক্তরাষ্ট্রের বিমান হামলায় নিহত ৩১
ইয়েমেনে হুথিদের ওপর বড় আকারের বিমান হামলা চালিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। হামলায় কমপক্ষে ৩১ জন নিহত হয়েছেন, যাদের বেশিরভাগই নারী ও শিশু।
হামলায় আরও ১০১ জন আহত হয়েছেন। এই সামরিক হামলা বহু দিন স্থায়ী হবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। রোববার (১৬ মার্চ) আল জাজিরার এক প্রতিবেদনে এ খবর জানা গেছে।
কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যমটি জানায়, গাজা উপত্যকায় ইসরায়েলের চাপানো তিন সপ্তাহ ধরে চলতে থাকা পূর্ণ অবরোধের জবাবে ইয়েমেনের হুথি গোষ্ঠী সম্প্রতি লোহিত সাগর দিয়ে চলাচলকারী জাহাজগুলোতে পুনরায় আক্রমণ শুরু করার হুমকি দেওয়ার পর এই হামলাগুলো ঘটল।
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প সতর্ক করে দিয়েছেন যে, লোহিত সাগর দিয়ে চলাচলকারী জাহাজগুলোতে হামলার নারকীয় জবাব দেওয়া হবে।
এছাড়া ইরানকে হুতিদের প্রতি সমর্থন বন্ধ করতে হবে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন ট্রাম্প। মার্কিন প্রেসিডেন্ট বলেন, ইরান যদি যুক্তরাষ্ট্রকে হুমকি দিয়ে থাকে, তাহলে যুক্তরাষ্ট্র তাদের পুরোপুরি জবাবদিহিতার আওতায় আনবে এবং আমরা এতে ভালো আচরণ করব না।
ইয়েমেনের বিরুদ্ধে মার্কিন হামলা কয়েকদিন এমনকি সম্ভবত সপ্তাহব্যাপী চলতে পারে বলে একজন মার্কিন কর্মকর্তা সংবাদমাধ্যমকে জানান।
মার্কিন সামরিক সূত্র জানিয়েছে, তাদের যুদ্ধবিমানগুলো ইয়েমেনি টার্গেটে হামলা চালানোর জন্য লোহিত সাগরে বিমানবাহী রণতরী ইউএসএস হ্যারি ট্রুম্যান ব্যবহার করেছে।
আরও পড়ুনঃ যুক্তরাষ্ট্রে টর্নেডোর আঘাতে কমপক্ষে ৩৪ জন নিহত
এদিকে ইয়েমেনের রাজধানী সানায় মার্কিন হামলায় অন্তত ১৩ বেসামরিক নাগরিক নিহত ও নয়জন আহত হয়েছেন বলে জানিয়েছে হুথি পরিচালিত স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়।
অন্যদিকে লেবানিজ সংবাদমাধ্যম আল মায়াদিন থেকে জানা গেছে, ইয়েমেনের রাজধানী সানার উত্তরে শাউব জেলার একটি আবাসিক এলাকা লক্ষ্য করে মার্কিন-ব্রিটিশ জোটের বেশ কয়েকটি বিমান হামলা চালানো হয়েছে।
ইয়েমেনি স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র আনিস আল-আসবাহির মতে, ওইসব হামলায় প্রাথমিকভাবে ১৩ জন বেসামরিক নাগরিক নিহত এবং নয়জন আহত হয়েছে। আহতদের বেশিরভাগের অবস্থা গুরুতর।
হামলার প্রতিক্রিয়ায় ১৫ মার্চ একটি উচ্চস্তরের ইয়েমেনি সূত্র সতর্ক করে জানিয়েছে, ইয়েমেনের ওপর মার্কিন-ব্রিটিশ বিমান হামলা গাজার প্রতি তাদের সমর্থন আরও বাড়িয়ে তুলতে পারে। আল মায়াদিনকে ইয়েমেনি সূত্রটি আশ্বস্ত করেছে যে, দেশটিতে চালানো হামলাগুলো বিনা জবাবে ছেড়ে দেওয়া হবে না। বরং মার্কিন হামলা গাজার প্রতি ইয়েমেনি সমর্থনকে নতুন উচ্চতায় নিয়ে যেতে পারে।
যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্যের বিমানের ধারাবাহিক বিমান হামলা চালানো হয় ইয়েমেনের সাদা শহরে। এরপর ধামর শহর ও আনস জেলা, ধামর গভর্নরেটের পূর্বে এবং মধ্য ইয়েমেনের আল-বাইদা গভর্নরেটকে লক্ষ্য করেও বিমানহামলা শুরু হয়। ধামর শহরের পূর্বে একটি খনি লক্ষ্য করে মার্কিন বিমান হামলা চালানো হয় বলে আল মায়াদিনের সংবাদদাতা রিপোর্ট করেছেন। আল-বাইদা গভর্নরেটকে লক্ষ্য করে মার্কিন-ব্রিটিশ যুদ্ধবিমান আরও আটটি বিমান হামলা চালায়।
প্রাথমিকভাবে জানা গেছে, উত্তর সাদার কুঝায় চালানো বিমান হামলায় ১০ জন বেসামরিক নাগরিক নিহত এবং ১৩ জন আহত হয়েছেন। তাদের বেশিরভাগই নারী ও শিশু। ওই হামলায় একই প্রদেশে, আজলা আল-শা’ফের একটি আবাসিক এলাকা লক্ষ্য করে করা বিমান হামলায় একজন বেসামরিক নাগরিক নিহত এবং আরেকজন আহত হন।
১৬ মার্চ ভোরে সানার আত্তান এলাকা এবং সাদার দাহিয়ান শহরকে লক্ষ্য করে বেশ কয়েকটি হামলা চালানো হয়েছে। আল মায়াদিন থেকে জানা গেছে, হামলাগুলো বেসামরিক অবকাঠামোর পাশাপাশি আবাসিক এলাকাগুলোকেও লক্ষ্য করে চালানো হয়েছে। সর্বশেষ হামলায় দুটি বিদ্যুৎকেন্দ্রও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ফলে দাহিয়ানে বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে।
>