কমলগঞ্জে মানহীন সিমেন্ট থেকে তৈরি হচ্ছে খোয়া, সস্তায় বিক্রি

পরিত্যক্ত সিমেন্টের দলা ভেঙে তৈরি করা খোয়া ব্যবহার করা হচ্ছে নির্মাণসামগ্রী হিসেবে। এমন মানহীন সামগ্রী ব্যবহারে ঝুঁকিপূর্ণ নির্মাণকাজ চলছে কমলগঞ্জের বিভিন্ন স্থানে।

বস্তাবন্দি সিমেন্ট দীর্ঘদিন ধরে পড়ে থাকলে সেগুলো শুকিয়ে জমাট বেঁধে শক্ত হয়ে যায়। মূলত মেয়াদোত্তীর্ণ সিমেন্টে থাকা ক্লিঙ্কার এভাবে জমাট বেঁধে পাথরে পরিণত হয়। সেই দলা ভেঙে পাথরের খোয়া হিসেবে ব্যবহার করা হচ্ছে নির্মাণকাজে। এতে করে ভালো মানের ইট বা পাথর থেকে আসল খোয়ার মতো দীর্ঘস্থায়িত্ব পাওয়ার নিশ্চয়তা না থাকায় নির্মিত ভবন নিয়ে ঝুঁকির আশঙ্কা প্রবল বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।

মূলত মেয়াদোত্তীর্ণ এই পাথরের খোয়া উৎপাদন করা হচ্ছে কমলগঞ্জ উপজেলার পতনঊষার ইউনিয়নের উসমানগড় এলাকায়। সেই খোয়া ব্যবহার করা হচ্ছে রাস্তাঘাট ও ভবন নির্মাণে।

জানা যায়, খোয়া মূলত কংক্রিট তৈরির কাজে ব্যবহৃত হয়। দীর্ঘস্থায়ী ও মজবুত স্থাপনার জন্য প্রথম শ্রেণির মানসম্পন্ন পাথর বা ইটের খোয়া ব্যবহার করা নিরাপদ। এমনটাই বলছেন অভিজ্ঞ নির্মাণ শ্রমিকরা। সেখানে মানহীন খোয়া ব্যবহার হলে স্থাপনা ঝুঁকিতে থাকে।

আরও পড়ুনঃ হাত দিলেই উঠে যাচ্ছে পিচ

বস্তাভর্তি সিমেন্ট পরিত্যক্ত অবস্থা বছরের পর বছর মাটির মধ্যে থাকার এক পর্যায়ে সিমেন্টের উপকরণগুলোর মান নষ্ট হয়ে সেগুলো দলা বেঁধে শক্ত হয়ে যায়। এভাবে সিমেন্টে থাকা অন্যতম উপকরণ ক্লিঙ্কার জমাট বেঁধে শক্ত পাথরের মতো দলায় পরিণত হয়। সেসব পাথর সংগ্রহ করে একটি মহল উসমানগড় এলাকায় তৈরি করছে খোয়া।

এদিকে মেয়াদ উত্তীর্ণ পাথর দিয়ে খোয়া তৈরির বিষয়ে উসমানগড়ে অবস্থিত কারখানার ব্যবস্থাপক সুমন মিয়া বলেন, শমশেরনগরে অবস্থিত বাংলাদেশ বিমানবাহিনীর ইউনিট থেকে ১৪ লাখ টাকায় এগুলো কিনে আনা হয়েছে। এখন খোয়া তৈরি করা হচ্ছে। যারা কাজে লাগাবেন তারা পাথরের খোয়া দেখেশুনে কিনে নিচ্ছেন।

স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর (এলজিইডি) কমলগঞ্জ উপজেলা প্রকৌশলী মো. সাইফুল আজম বলেন, এগুলো রাস্তা নির্মাণকাজে ব্যবহার হয় না। ব্যক্তিগতভাবে কেউ নিয়ে গেলে সেটি তাদের বিষয়। সূত্র বলছে, অনেক স্থানে রাস্তা মেরামতের কাজে গোপনে মানহীন এ খোয়া ব্যবহার করা হয়েছে।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মাখন চন্দ্র সূত্রধর বলেন, এ ধরনের কোনো অভিযোগ এখন পর্যন্ত তাদের কাছে আসেনি। এছাড়া এমন কিছু সম্পর্কে তিনি অবগত নন। এ বিষয়ে খোঁজ নিয়ে দেখবেন।

মাসুদুজ্জামান