কানাডায় ১৭৪ কোটি টাকার সোনা চুরিতে অভিযুক্ত সিমরানের হদিশ মিলল ভারতে

কানাডায় ১৭৪ কোটি টাকার সোনা চুরিতে অভিযুক্ত। হন্যে হয়ে খুঁজছে কানাডার পুলিশ। এই রিপোর্ট অনুযায়ী, ভারতে হদিশ মিলল সেই সিমরানপ্রীত পানেসরের। যিনি এয়ার কানাডার প্রাক্তন ম্যানেজার। আপাতত ভারতে আছেন বলে জানানো হয়েছে ওই রিপোর্টে।

কানাডার ইতিহাসে সবথেকে বড় সোনা চুরির ঘটনায় অভিযুক্তের হদিশ মিলল চণ্ডীগড়ে। যে ঘটনায় প্রায় ১৭৪ কোটি টাকার সোনা উধাও হয়ে গিয়েছিল। সংবাদসংস্থা ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসের প্রতিবেদন অনুযায়ী, পরিবারের সঙ্গে চণ্ডীগড়ে থাকছেন এয়ার কানাডার প্রাক্তন ম্যানেজার সিমরানপ্রীত পানেসর।

কানাডার সংবাদমাধ্যম সিবিসি নিউজের সঙ্গে যৌথভাবে তদন্ত চালিয়ে জানা গিয়েছে স্ত্রী প্রীতি পানেসরের সঙ্গে একটি ভাড়াবাড়িতে থাকছেন সিমরানপ্রীত। তবে গায়ক, অভিনেতা ও প্রাক্তন মিস ইন্ডিয়া-উগান্ডা প্রীতি সেই ঘটনায় যুক্ত ছিলেন না বলে অনুমান করা হয়। তাঁরা অবশ্য সেই ঘটনা নিয়ে মুখ কুলুপ এঁটেছেন। ‘আইনি কারণে’ পুরো ঘটনা নিয়ে কোনও মন্তব্য করতে চাননি। যে বিষয়টি নিয়ে সিমরানপ্রীতের আইনি দল লড়াই চালাচ্ছে কানাডায়।

আরও পড়ুনঃ ট্রাম্পের নতুন শুল্ক আরোপের বিরুদ্ধে ট্রুডোর কড়া প্রতিক্রিয়া

আর যে ঘটনার প্রেক্ষিতে এত কিছু, সেটার সূত্রপাত হয়েছিল ২০২৩ সালের ১৭ এপ্রিল। রিপোর্ট অনুযায়ী, সেদিন সুইৎজারল্যান্ডের জুরিখ থেকে কানাডার টরেন্টোর পিয়ারসন আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে একটি বিমান অবতরণ করেছিল। তাতে ৪০০ কিলোগ্রাম সোনা (০.৯৯৯৯ শতাংশ পিওর গোল্ডের ৬,৬০০টি বার) ছিল। তারপর নিয়মমতো বিমান থেকে সোনা নামিয়ে বিমানবন্দরের জায়গায় নিয়ে যাওয়া হয়েছিল। কিন্তু পরদিন ভোরের দিকে সেই সোনা উধাও হয়ে যায়।

তদন্ত শুরু করা হয় সেই ঘটনায়। ওই রিপোর্ট অনুযায়ী, যেখানে সোনা রাখা হয়েছিল, সেখানে কর্মরত দুই ইন্দো-কানাডিয়ানকে তন্নতন্ন করে খুঁজতে থাকে পুলিশ। শেষপর্যন্ত ২০২৪ সালের মে’তে পরমপাল সিধু ধরা পড়েন। ততদিনে অবশ্য কানাডা ছেড়ে চলে যান সিমরানপ্রীত। যিনি ম্যানেজার হিসেবে কাজ করতেন। এমনকী সোনা উধাও হয়ে যাওয়ার পরে যখন ঘটনাস্থলে পুলিশ গিয়েছিল, তখন তিনিই পুরো এলাকাটা ঘুরিয়ে দেখিয়েছিলেন।

২০২৪ সালের জুলাইয়ে সিমরানপ্রীতের আইনজীবী কানাডার সংবাদমাধ্যমে দাবি করেন, আগামী কয়েক সপ্তাহে আত্মসমর্পণের প্রস্তুতি নিচ্ছেন তাঁর মক্কেল। কারণ কানাডার বিচারবিভাগের উপরে আস্থা আছে বলে দাবি করেছিলেন। আর সেই সিমরানপ্রীতের হদিশ চণ্ডীগড় লাগোয়া এলাকায় মিলেছে বলে ওই ভারতীয় সংবামাধ্যমের রিপোর্টে জানানো হয়েছে। ওই রিপোর্ট অনুযায়ী, একেবারে সাধারণ জীবনযাপন করছেন সিমরানপ্রীত। যিনি প্রতিবেশীদের বলেছিলেন, কানাডায় যে আর্থিক মামলা চলছে, সেটার নিষ্পত্তি হয়ে গিয়েছে।

যদিও ওই রিপোর্ট অনুযায়ী, ‘প্রজেক্ট ২৪ ক্যারাট’ নাম দিয়ে এখনও তদন্ত অভিযান চালিয়ে যাচ্ছে কানাডার পুলিশ। যে নথিপত্র সামনে এসেছে, তাতে ওই ঘটনার জন্য কানাডার পুলিশ অফিসাররা ২৮,০৯৬ ঘণ্টা কাজ করেছেন। ‘ওভারটাইম’ করেছেন ৯,৫০০ ঘণ্টা। আর সেই তদন্ত এখনও চলছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।

মাসুদুজ্জামান রাসেল