কৃষিপণ্য সরবরাহে উৎসে কর কমাতে এনবিআরের ইতিবাচক পদক্ষেপ
আসন্ন বাজেটে কৃষিপণ্য সরবরাহের উৎসে কর পুরোপুরি প্রত্যাহার চান ব্যবসায়ীরা। এ নিয়ে তারা দীর্ঘদিন দাবি জানিয়ে আসছেন। পুরোপুরি তুলে না দিলেও ১ শতাংশ থেকে কমিয়ে উৎসে কর শূন্য দশমিক ৫০ শতাংশ করতে পারে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)।
অর্থ মন্ত্রণালয় সূত্রে এ তথ্য জানা যায়। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, এ সিদ্ধান্ত যদি কার্যকর হয় তাহলে স্বল্প আয়ের মানুষ কিছুটা স্বস্তি পাবে। পাশাপাশি মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে এ সিদ্ধান্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে।
চলতি অর্থবছরের বাজেটে এর আগে প্রায় ৩০ ধরনের কৃষিপণ্যে উৎসে কর ২ শতাংশ থেকে কমিয়ে ১ শতাংশ করা হয়। মূল্যস্ফীতির সামগ্রিক দিক বিবেচনায় আগামী অর্থবছরের বাজেটে বেশ কয়েক বছরের জন্য উৎসে কর প্রত্যাহারের দাবি জানিয়েছেন ব্যবসায়ীরা।
প্রাণ-আরএফএল গ্রুপের জেনারেল ম্যানেজার মোল্লাহ আসেফ হোসেন বলেন, কমিয়ে শূন্য দশমিক ৫০ বা শূন্য দশমিক ২৫ শতাংশ নয়, আমরা পুরোটাই প্রত্যাহার চাই। কেননা কৃষিপণ্য আমরা হাটবাজার থেকে সংগ্রহ করি। সেখানে উৎসে কর কর্তনের কোনো সুযোগই নেই।
আরও পড়ুনঃ মুরগির দাম কিছুটা কমলেও বেড়েছে চাল, পেঁয়াজ ও ভোজ্যতেলের
বিগত কয়েক বছর ধরে দ্রব্যমূল্যের ক্রমাগত ঊর্ধ্বগতিতে মধ্যবিত্ত ও স্বল্প আয়ের মানুষ দিনাতিপাত করছে কষ্টে। গত বছরের ৫ আগস্ট গণআন্দোলনের মুখে পতন ঘটে শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন আওয়ামী লীগ সরকারের। ওই সময় মূল্যস্ফীতি ছিল ১০ দশমিক ৪৯ শতাংশ। সেপ্টেম্বরে মূল্যস্ফীতি কমে ৯ দশমিক ৯২ শতাংশ হলেও অক্টোবরে তা আবার দুই অঙ্কের ঘর ছাড়ায়। বাজার নিয়ন্ত্রণ, বিভিন্ন পণ্যে শুল্ক-কর হ্রাসসহ নানা পদক্ষেপে গত জানুয়ারি মাসে মূল্যস্ফীতি ১০ শতাংশের নিচে নেমে আসে।
এ অবস্থায় বাজার সহনীয় রাখতে আগামী বাজেটে কমানো হতে পারে কৃষিপণ্য সরবরাহের উৎসে কর। এনবিআর কর্মকর্তারা বলছেন, ধান, চালসহ সবধরনের কৃষিপণ্য সরবরাহে উৎসে কর হবে দশমিক ৫ শতাংশ।
এনবিআর সংশ্লিষ্টরা জানান, ধান, চাল, গম, ভুট্টা, পাটসহ নানা ধরনের কৃষিপণ্যের ব্যবসায় ব্যাপকভাবে জড়িয়েছে বড় করপোরেট প্রতিষ্ঠানগুলো। সাধারণত একশ্রেণির এজেন্টের মাধ্যমে কৃষিপণ্য সংগ্রহ করে কোম্পানিগুলো। আবার সরকারও মজুত রাখতে ধান, চাল ও গম সংগ্রহ করে।
এই প্রক্রিয়ায় যারা সরবরাহকারী তাদের কাছে উৎসে কর আদায় করে এনবিআর। এনবিআর কর্মকর্তারা বলছেন, সরবরাহকারী কৃষক আলাদা। ফলে কর থাকলে কৃষকের ওপরও প্রভাব পড়বে না। উৎসে কর তুলে দিলে এজেন্ট গোষ্ঠী করের আওতার বাইরে চলে যাবে।
জানতে চাইলে এনবিআরের শীর্ষ এক কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করে বলেন, সাধারণ মানুষের স্বস্তির বিষয়টি বিবেচনা করে এবারের বাজেট প্রণয়নের চিন্তা-ভাবনা চলছে। ভোক্তা যাতে কম খরচে পণ্যটি পেতে পারে সেজন্য কৃষিপণ্য সরবরাহে উৎসে কর আমরা কমানোর প্রস্তাব করব।
>