জর্ডানের পেত্রায় আকস্মিক বন্যা, প্রায় ১৮০০ পর্যটককে নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে

জর্ডানের প্রাচীন ও ঐতিহ্যবাহী শহর পেত্রায় আকস্মিক বন্যার কারণে জনজীবনে দেখা দিয়েছে বিশৃঙ্খলা। গোলাপি পাথরের পাহাড় কেটে গড়া এই প্রত্নতাত্ত্বিক শহরটি শুধু জর্ডানের নয়, গোটা বিশ্বের ইতিহাসপ্রেমীদের কাছে এক গুরুত্বপূর্ণ দর্শনীয় স্থান। কিন্তু আবহাওয়ার হঠাৎ রুদ্র রূপে সেই শহরেই এবার ভয়াবহ দুর্যোগ দেখা দেয়। ভাগ্য ভালো, প্রশাসনের দ্রুত পদক্ষেপে কোনো প্রাণহানির ঘটনা ঘটেনি।

রোববার (৪ মে), আকস্মিক বন্যার কারণে পেত্রা শহর থেকে প্রায় ১ হাজার ৮০০ পর্যটককে সরিয়ে নেওয়া হয়। এই দুর্যোগে পেত্রার প্রত্নতাত্ত্বিক অঞ্চল কিছুটা ক্ষতিগ্রস্ত হয়। ইয়াজান মোহাদিন নামে এক স্থানীয় কর্মকর্তা জর্ডানের রাষ্ট্রীয় টেলিভিশন আল-মামলাকা’কে জানান, রেকর্ড অনুযায়ী ওইদিন শহরে ১,৭৮৫ জন পর্যটক ছিলেন এবং বেসামরিক প্রতিরক্ষা বাহিনী তাদের অধিকাংশকেই নিরাপদে সরিয়ে নেয়। তিনি স্পষ্টভাবে জানান, এ ঘটনায় কোনো হতাহতের খবর পাওয়া যায়নি।

এদিকে জর্ডানের আবহাওয়া অধিদপ্তর একটি ভিডিও প্রকাশ করেছে যেখানে পেত্রা শহরে হঠাৎ বন্যার চিত্র ধরা পড়ে। ভিডিওতে দেখা যায়, আতঙ্কিত পর্যটকরা ঐতিহাসিক ‘ট্রেজারি’ ভবনের প্রবেশপথের সামনে জড়ো হয়ে পড়েন। ঠিক সেই মুহূর্তে প্রশাসনের তৎপরতায় তাদের দ্রুত নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নেওয়া হয়।

আরও পড়ুনঃ ভারত-পাকিস্তান সীমান্তে মধ্যরাতে ব্যাপক গোলাগুলি

এর আগেও পেত্রায় এমন বন্যার ঘটনা ঘটেছে। জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবে ওই অঞ্চলে বৃষ্টি ও ঝড়ের প্রবণতা বেড়ে যাওয়ায় এ ধরনের দুর্যোগের ঝুঁকিও বাড়ছে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।

প্রসঙ্গত, পেত্রা শহরটি ইউনেস্কো ঘোষিত একটি বিশ্ব ঐতিহ্যবাহী স্থান এবং ২০০৭ সালে অনুষ্ঠিত এক অনলাইন জরিপে বিশ্বের নতুন সপ্তম আশ্চর্যের তালিকায় স্থান পেয়েছে। এই শহরের মন্দির ও স্থাপত্যগুলো খোদাই করা হয়েছে পাহাড়ের বুকে, যা হাজারো বছর ধরে মানুষের বিস্ময় জাগিয়েছে।

জলবায়ু সংকটের এই সময়ে এমন ঐতিহ্যবাহী স্থানগুলোর রক্ষা এবং পর্যটকদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে আরও জোরালো ও দীর্ঘমেয়াদি উদ্যোগ গ্রহণের প্রয়োজন রয়েছে।

রোজিনা