নতুন কৌশল নিচ্ছে মানব পাচারকারীরা

মানব পাচারকারীরা প্রতিনিয়তই তাদের কৌশল বদল করছে। নিত্য নতুন কৌশলে তারা মানব পাচার অব্যাহত রেখেছে। মানব পাচার বন্ধে প্রতিটি দেশের কঠোর পদক্ষেপ নেয়ার আহ্বান জানানো হয়েছে বিমসটেক সাব-গ্রুপের বৈঠকে। রাজধানীর হোটেল প্যান প্যাসিফিক সোনারগাঁওয়ে মানব পাচার সংক্রান্ত বিমসটেক সাব-গ্রুপের তৃতীয় সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে।

প্রধান অতিথি ছিলেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগের রাজনৈতিক ও আইসিটি অনুবিভাগের অতিরিক্ত সচিব এবং মানব পাচার-সংক্রান্ত বিমসটেক সাব-গ্রুপের তৃতীয় সভার চেয়ারম্যান খন্দকার মো. মাহাবুবুর রহমান স্বগত বক্তব্য দেন। এছাড়া শুভেচ্ছা বক্তব্য রাখেন বিমসটেক সেক্রেটারিয়েট ঢাকার পরিচালক প্রশান্থ চান্দ্রান।

বৈঠকে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী বলেছেন, মানব পাচার রোধে বাংলাদেশ তার প্রতিশ্রুতিতে অটল রয়েছে এবং এ লক্ষ্যে কাজ করে যাচ্ছে। মানব পাচার সংক্রান্ত অপরাধের সঙ্গে জড়িতদের জবাবদিহি করার জন্য শক্তিশালী আইনি কাঠামো প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে। এ বিষয়ে আইন প্রয়োগকারী সংস্থাগুলোকে সজাগ রাখার পাশাপাশি সীমান্তে নিরাপত্তাব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে।

মানব পাচারকারীদের বিচার দ্রুত করার জন্য বিশেষ ট্রাইব্যুনাল প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে জানিয়ে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা জাহাঙ্গীর বলেন, আমাদের জাতীয় কৌশলে সচেতনতামূলক প্রচারণাগুলোকে পদ্ধতিগতভাবে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। একই সঙ্গে আমরা বিমসটেক এবং অন্যান্য দেশের সঙ্গে এ বিষয়ে সহযোগিতা জোরদার করার জন্য আমাদের পারস্পরিক আইনি সহায়তা ব্যবস্থাকে প্রসারিত করেছি।

আরও পড়ুনঃ সাগরে লঘু চাপ সৃষ্টির শঙ্কা, হতে পারে বৃষ্টি ও শিলাবৃষ্টি

বিমসটেক সদস্য রাষ্ট্রগুলো মানব পাচারের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে উল্লেখযোগ্য পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে মন্তব্য করে তিনি বলেন, পাচার কারীরা সরকারি উদ্যোগগুলোকে এড়িয়ে যাওয়ার জন্য ক্রমাগত নিত্য নতুন কৌশল গ্রহণ করে। তারা সংশ্লিষ্ট জনগোষ্ঠীর অর্থনৈতিক সংকট ও দারিদ্র্যকে কাজে লাগিয়ে ও প্রযুক্তির অপব্যবহারের মাধ্যমে তাদের গোপন কার্যকলাপ এগিয়ে নেয়ার জন্য অভিবাসন রুটগুলোকে কাজে লাগাতে থাকে।

এই অপরাধের বিরুদ্ধে লড়াইয়ের জন্য একটি সম্মিলিত এবং কৌশলগত কর্মপদ্ধতি প্রয়োজন এবং সদস্য রাষ্ট্রগুলোর মধ্যে গোয়েন্দা তথ্য ও সেরা অনুশীলন বিনিময়ের মাধ্যমে একটি প্লাটফর্ম প্রদানে বিমসটেক গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে যাচ্ছে। সভায় বিমসটেকভুক্ত সাত সদস্য দেশের (বাংলাদেশ, ভারত, মিয়ানমার, শ্রীলংকা, থাইল্যান্ড, নেপাল ও ভুটান) মানব পাচার সংক্রান্ত সাব-গ্রপের সংশ্লিষ্ট সদস্যরা অংশগ্রহণ করেন।

উপদেষ্টা বলেন, বাংলাদেশ মানব পাচার মোকাবিলায় জাতীয় কর্মপরিকল্পনা প্রণয়ন, মানব পাচারের শিকার ভুক্তভোগীদের দক্ষতার সঙ্গে শনাক্তকরণ, তাদের চাহিদা মূল্যায়ন এবং উপযুক্ত পরিষেবা প্রদানকারীদের সঙ্গে সংযুক্ত করার জন্য একটি জাতীয় রেফারেল ব্যবস্থা (ওয়েব প্ল্যাটফরমে হোস্ট করা)-সহ সক্রিয় পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে। উপদেষ্টা আগামী দুই বছরের জন্য বিমসটেকের চেয়ারম্যানের দায়িত্ব বাংলাদেশকে অর্পণ করার জন্য এর সদস্য রাষ্ট্রগুলোর প্রতি আন্তরিক কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন।

মাসুদুজ্জামান রাসেল