‘প্রিয় মালতী’: সংগ্রাম, স্বপ্ন আর জীবনযুদ্ধের এক গল্প

 

‘সেলাই করতে করতে ফ্যাক্টরি দিয়া দিমু’—হাসতে হাসতেই স্বামীকে করা মালতীর এই আবদার যেন নিমেষেই বিষাদে রূপ নেয়। অগ্নিকাণ্ডে স্বামীকে হারিয়ে জীবনের কঠিন বাস্তবতার মুখোমুখি হয় মালতী। এভাবেই সমাজের এক বাস্তব চিত্র তুলে ধরেছে মেহজাবীন চৌধুরীর প্রথম সিনেমা ‘প্রিয় মালতী’, যার ট্রেলার সম্প্রতি প্রকাশিত হয়েছে।

মেহজাবীনের বড়পর্দায় অভিষেক

১৫ বছরের অভিনয় ক্যারিয়ারে ছোট পর্দায় ব্যাপক জনপ্রিয়তা অর্জন করা মেহজাবীন এবার বড়পর্দায় অভিষেক করছেন। সিনেমাটির গল্পে নিম্নমধ্যবিত্ত এক দম্পতির স্বপ্ন, সংগ্রাম এবং সমাজের বাস্তব সমস্যাগুলো চিত্রিত হয়েছে। স্বামীর অকালমৃত্যুর পর জীবিকার জন্য লড়াই করা মালতীর কষ্ট, প্রশ্নবোধক পরিস্থিতি এবং মনস্তাত্ত্বিক সংগ্রাম সিনেমার কেন্দ্রবিন্দু।

সত্য ঘটনার অনুপ্রেরণা

পরিচালক শঙ্খদাস গুপ্তের প্রথম সিনেমা ‘প্রিয় মালতী’ একটি সত্য ঘটনা থেকে অনুপ্রাণিত। শঙ্খদাস জানান, মালতীর চরিত্রটি এক সংগ্রামী নারীর গল্প। সমাজে প্রচলিত রীতিনীতির সঙ্গে লড়াই করে নিজের অস্তিত্বের প্রমাণ রাখার সংগ্রামে মগ্ন একজন নারীর প্রতিচ্ছবি এই চরিত্রে ফুটে উঠেছে।

গল্পের পটভূমি

  • মালতী চরিত্রের জীবনে হঠাৎ ঘটে যাওয়া একটি অগ্নিকাণ্ড পুরো জীবনকে ওলটপালট করে দেয়।
  • স্বামী হারানোর পর লাশ খুঁজে পাওয়া যায় না।
  • সরকারি সহায়তার অভাব ও সমাজের চাপ মোকাবিলা করতে হয় তাকে।
  • অন্তঃসত্ত্বা মালতীকে শহরের বিশৃঙ্খল পরিবেশ, শ্বশুরবাড়ি ও ধর্মীয় রীতিনীতির সঙ্গে লড়তে হয়।

পরিচালকের দৃষ্টিভঙ্গি

পরিচালক বলেছেন, ‘প্রিয় মালতী’ কেবল একটি নারীর সংগ্রামের গল্প নয়, এটি দেশের মানুষের সার্বজনীন সমস্যা। সিনেমায় তিনি সমাজের প্রচলিত নিয়মগুলোকে প্রশ্ন করেছেন। এমনকি মানবিক অস্তিত্বের ধারণা ডেথ সার্টিফিকেট এবং ময়নাতদন্ত রিপোর্টের মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকা উচিত কিনা, তা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন।

প্রযোজনা ও মুক্তি

সিনেমাটি প্রযোজনা করেছে ফ্রেম পার সেকেন্ড এবং চরকি। ট্রেলার প্রকাশের পরই এটি দর্শকদের মধ্যে ব্যাপক আগ্রহ তৈরি করেছে।

‘প্রিয় মালতী’ মেহজাবীনের অভিনয় জীবনের একটি নতুন অধ্যায়। এই সিনেমা একদিকে যেমন ব্যক্তিগত সংগ্রামের গল্প, তেমনি এটি আমাদের সমাজের অমীমাংসিত প্রশ্নগুলোর উত্তর খোঁজার একটি প্রচেষ্টা।