বন্যায় মৃতের সংখ্যা বেড়ে 20, ক্ষতিগ্রস্ত 5.2 মিলিয়নেরও বেশি মানুষ

রোববার কুমিল্লায় আরও দুজনের মৃত্যু হওয়ায় ভয়াবহ বন্যায় মৃতের সংখ্যা বেড়ে ২০-এ দাঁড়িয়েছে।

নিহতদের মধ্যে কুমিল্লায় ছয়জন, ফেনীতে একজন, চট্টগ্রামে পাঁচজন, নোয়াখালীতে তিনজন, ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় একজন, লক্ষ্মীপুরে একজন ও কক্সবাজারে তিনজন এবং মৌলভীবাজার জেলায় দুইজন নিখোঁজ রয়েছেন।

দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয় আজ সন্ধ্যায় বন্যা পরিস্থিতির আপডেট দিয়েছে।

২০ আগস্ট থেকে চলমান বন্যায় ফেনী, কুমিল্লা, চট্টগ্রাম, খাগড়াছড়ি, নোয়াখালী, মৌলভীবাজার, হবিগঞ্জ, ব্রাহ্মণবাড়িয়া, সিলেট, লক্ষ্মীপুর ও কক্সবাজার জেলা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।

১১টি জেলার ৭৭টি উপজেলার ৫৪৫টি ইউনিয়ন ও পৌরসভায় বন্যায় ৫২ লাখ ৯৯ হাজার ৭৯৮ জন ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।

বন্যায় মোট 10,47,029 পরিবার আটকা পড়েছে এবং 4,15,273 জন 3,654টি আশ্রয় কেন্দ্রে আশ্রয় নিয়েছে। সেখানে মোট 22,298টি গবাদি পশুকেও আশ্রয় দেওয়া হয়েছে।

বন্যা কবলিত ১১টি জেলার জন্য নগদ ৩ কোটি ৫২ লাখ টাকা, ২০ হাজার ৬৫০ টন চাল ও ১৫ হাজার প্যাকেট শুকনো খাবার, ৩৫ লাখ টাকা শিশুর খাদ্য এবং ৩৫ লাখ টাকা পশুর খাদ্য বরাদ্দ করা হয়েছে। মোট 748 টি মেডিকেল টিম ক্ষতিগ্রস্থদের চিকিৎসা দিতে কাজ করছে।

সেনাবাহিনী, নৌবাহিনী, কোস্টগার্ড, বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি), ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স এবং জেলা প্রশাসনের সমন্বয়ে ছাত্রসমাজ ওইসব এলাকায় উদ্ধার তৎপরতা চালাচ্ছে।

বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সদস্যদের সংগ্রহ করা মোট ৭,২০০ ব্যাগ বা বস্তা ত্রাণ সামগ্রী ত্রাণ কার্যক্রম অব্যাহত রাখতে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদপ্তরের ব্যবস্থাপনায় বন্যা কবলিত এলাকায় পাঠানো হয়েছে।

বন্যা কবলিত এলাকা পরিদর্শন করেছেন দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ উপদেষ্টা ফারুক-ই-আজম ও সচিব মোঃ কামরুল হাসান।

তথ্য ও সহায়তা প্রদানের জন্য মন্ত্রণালয়ের কন্ট্রোল রুম চব্বিশ ঘন্টা খোলা থাকে। কন্ট্রোল রুমের নম্বর 0255101115।

বন্যা কবলিত মানুষের প্রয়োজনীয় সেবা নিশ্চিত করতে স্থানীয় ক্লিনিক, হাসপাতাল ও স্বাস্থ্যসেবা সুবিধার নির্দেশনা দিয়েছেন সংশ্লিষ্ট জেলা প্রশাসকরা।

বন্যা কবলিত জেলার জেলা প্রশাসকদেরও বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক, সেনাবাহিনী, নৌবাহিনী, মেডিকেল টিম এবং অন্যান্য স্বেচ্ছাসেবকদের সাথে সমন্বয় করে কাজ করার জন্য প্রয়োজনীয় নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।

বন্যা দুর্গতদের পাশে দাঁড়াতে আগ্রহীদের ‘প্রধান উপদেষ্টার ত্রাণ ও কল্যাণ তহবিলে’ অর্থ পাঠানোর আহ্বান জানানো হয়েছে।

আগ্রহীদের তহবিলের অ্যাকাউন্টে অর্থ জমা বা পাঠাতে অনুরোধ করা হয়েছে — অ্যাকাউন্ট নম্বর: 0107333004093, ব্যাংকের নাম: সোনালী ব্যাংক কর্পোরেট শাখা, প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়।

আবহাওয়া সংস্থার তথ্য অনুযায়ী, আগামী ২৪ ঘণ্টায় দেশের পূর্বাঞ্চল ও তৎসংলগ্ন উচ্চভূমিতে মাঝারি থেকে ভারী বর্ষণ হতে পারে।

এ সময় এ অঞ্চলের কুমিল্লা জেলার গোমতী নদীর পানির উচ্চতা স্থিতিশীল থাকতে পারে এবং সংলগ্ন নিম্নাঞ্চলের বন্যা পরিস্থিতি স্থিতিশীল থাকতে পারে।

আগামী ২৪ ঘণ্টায় দেশের দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চল ও তৎসংলগ্ন উচ্চভূমিতে ভারী বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা রয়েছে।

এছাড়াও বান্দরবান, খাগড়াছড়ি, কক্সবাজার ও চট্টগ্রাম জেলার সাঙ্গু, মাতামুহুরী, কর্ণফুলী, হালদাসহ প্রধান নদ-নদীর পানি বৃদ্ধি পেতে পারে।