বাজেট ঘাটতি মেটাতে সরকারের ঋণ নির্ভরতা বাড়ছে
২০২৫–২৬ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটে ঘাটতির পরিমাণ ধরা হয়েছে ২ লাখ ২৬ হাজার কোটি টাকা, যা দেশের মোট জিডিপির ৩.৬২ শতাংশ। এই ঘাটতি পূরণে সরকার দেশি ও বৈদেশিক উৎসের ঋণের ওপর অধিক নির্ভর করছে।
বাজেট ঘাটতির বড় একটি অংশ, প্রায় ১ লাখ ১ হাজার কোটি টাকা বৈদেশিক উৎস থেকে নেয়া হবে। বাকি ১ লাখ ২৫ হাজার কোটি টাকা সংগ্রহ করা হবে অভ্যন্তরীণ উৎস থেকে।
সোমবার (২ জুন) বিকেলে রাষ্ট্রীয় সম্প্রচারমাধ্যম বিটিভিসহ বিভিন্ন গণমাধ্যমে একযোগে বাজেট প্রস্তাব উপস্থাপন করেন অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ। তিনি বলেন, দেশের অর্থনীতিকে স্থিতিশীল করা গেলেও সামনে এখনো অনেক চ্যালেঞ্জ অপেক্ষা করছে। তাই প্রবৃদ্ধির গতি বৃদ্ধির চেয়ে অর্থনীতির ভিত্তি মজবুত করাকেই সরকার বেশি অগ্রাধিকার দিচ্ছে।
আরও পড়ুনঃ অবশেষে বাংলাদেশে চালু হতে যাচ্ছে ‘গুগল পে’
এদিকে ব্যাংক খাত থেকে সরকারের ঋণ নেয়ার প্রবণতা বাড়ছে। চলতি অর্থবছরের ২১ মে পর্যন্ত ব্যাংক ব্যবস্থা থেকে সরকারের নিট ঋণের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে প্রায় ৬০ হাজার কোটি টাকা, যেখানে জানুয়ারি পর্যন্ত এই পরিমাণ ছিল মাত্র ১৩ হাজার ৫৭১ কোটি টাকা। রাজস্ব আদায়ে লক্ষ্যপূরণ না হওয়া, সঞ্চয়পত্র বিক্রির গতি কমে যাওয়া এবং বৈদেশিক ঋণ ছাড় কমে যাওয়াই এর পেছনে অন্যতম কারণ।
অর্থ উপদেষ্টা বলেন, সাম্প্রতিক মাসগুলোতে মূল্যস্ফীতি কিছুটা কমেছে, তবে তা এখনও কাঙ্ক্ষিত পর্যায়ে আসেনি। তিনি আরও বলেন, বাজেটের আকার এই বছর ৭ লাখ ৯০ হাজার কোটি টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে, যা গত অর্থবছরের ৭ লাখ ৯৭ হাজার কোটি টাকার তুলনায় কম।
এই প্রথমবারের মতো বাংলাদেশের ইতিহাসে বাজেটের আকার হ্রাস পেয়েছে, যা সময়ের প্রেক্ষিতে বাস্তববাদী সিদ্ধান্ত বলেই মনে করছেন বিশ্লেষকরা। রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ৪ লাখ ৯৯ হাজার কোটি টাকা।
অর্থ উপদেষ্টা সালেহউদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘আমরা চাই এমন একটি অর্থনৈতিক কাঠামো গড়ে তুলতে, যেখানে সকল নাগরিকের জন্য থাকবে মানসম্মত জীবনযাত্রা এবং বৈষম্যহীন সুযোগ। সেই লক্ষ্যেই বাজেট পরিকল্পনা করা হয়েছে।’
তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন, জনগণের সম্মিলিত প্রয়াসেই ভবিষ্যতের বাংলাদেশ হবে একটি অন্তর্ভুক্তিমূলক ও স্থিতিশীল অর্থনীতির দেশ, যা সারা বিশ্বের জন্য হবে একটি অনুকরণীয় দৃষ্টান্ত।
>