ভারত-পাকিস্তান সীমান্ত থেকে অতিরিক্ত সেনা প্রত্যাহার শেষ পর্যায়ে

ভারত ও পাকিস্তান তাদের সীমান্ত থেকে অতিরিক্ত সেনা সদস্যদের সরিয়ে নেয়ার শেষ পর্যায়ে রয়েছে। পেহেলগাম হামলাকে কেন্দ্র করে সংঘাতের মধ্যে সীমান্তে বিপুল সংখ্যক সেনা মোতায়েন করেছিল দুই দেশ। সীমান্তে উত্তেজনা কমলেও দুই দেশের রাজনৈতিক নেতারা একে অন্যকে দোষারোপ ও কৃতিত্ব দাবি করে বক্তব্য রেখে চলেছেন। 

শুক্রবার (৩০ মে) পাকিস্তানের শীর্ষ এক সামরিক কর্মকর্তা রয়টার্সকে বলেন, সাম্প্রতিক বিরোধের কারণে ভবিষ্যতে বড় সংঘাতের শঙ্কা বেড়েছে। চলতি মাসের প্রথমার্ধে এ সংঘাত চলাকালে উভয় পক্ষই যুদ্ধবিমান, ক্ষেপণাস্ত্র, ড্রোন ও সাঁজোয়া যান ব্যবহার করে। 

পাকিস্তানের জয়েন্ট চিফ অব স্টাফের চেয়ারম্যান জেনারেল সাহির শামশেদ মির্জা এক সাক্ষাৎকারে বলেন, দুই দেশের সামরিক বাহিনী সেনা প্রত্যাহার করছে। আমরা ইতোমধ্যে আগের পর্যায়ে পৌঁছেছি। 

এদিকে সীমান্ত থেকে সেনা প্রত্যাহার করার প্রক্রিয়া এগোলেও উত্তেজনার বারুদে আগুন দিতে দুই দেশের নেতাদের চেষ্টা থেমে নেই। টাইমস অব ইন্ডিয়া জানায়, শুক্রবার উত্তর প্রদেশের কানপুরে এক সভায় ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি পাকিস্তানের কঠোর সমালোচনা করেছেন। সেই সঙ্গে তিনি ভারতের অস্ত্রের প্রশংসা করেন। 

আরও পড়ুনঃ ডোনাল্ড ট্রাম্পকে তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধের হুমকি দিলেন দিমিত্রি মেদভেদেভ

তিনি বলেন, ‘অপারেশন সিঁদুর’ এখনও শেষ হয়ে যায়নি। এর মাধ্যমে বিশ্ব ভারতীয় অস্ত্রের ক্ষমতা দেখেছে। তিনি জানান, ভারতের অস্ত্র– ব্রাহ্ম ক্ষেপণাস্ত্র পাকিস্তানের সীমানার অভ্যন্তরে প্রবেশ করেছে এবং ধ্বংসযজ্ঞ চালিয়েছে। পাকিস্তানকে সতর্ক করে মোদি বলেন, ‘পারমাণবিক বোমা’র হুমকিতে ভারত আর ভয় পায় না; এটা মাথায় নিয়ে ভারত কোনো সিদ্ধান্তও গ্রহণ করে না।’

অপরদিকে পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফ ‘পানিকে অস্ত্র বানানো’র ভারতীয় চেষ্টার সমালোচনা করেছেন। পাকিস্তান এটা মেনে নেবে না জানিয়ে তিনি বলেন, সিন্ধু নদের পানি বন্ধ করার মতো ‘লাল রেখা’ অতিক্রমের সুযোগ তারা ভারতকে দেবেন না। সংকীর্ণ রাজনৈতিক ফায়দার জন্য (পাকিস্তানের) লাখ লাখ মানুষের জীবন ঝুঁকিতে পড়বে। দ্য ডন অনলাইন জানায়, তাজিকিস্তানের রাজধানী দুশানবেতে একটি আন্তর্জাতিক সম্মেলনে যোগ দিয়ে শাহবাজ এসব কথা বলেন।

গত ২২ এপ্রিল ভারতশাসিত কাশ্মীরের পেহেলগামে সন্ত্রাসী হামলায় অন্তত ২৬ জন নিহত হন। এ ঘটনায় পাকিস্তানকে দায়ী করে বিভিন্ন লক্ষ্যে হামলা চালায় ভারত। পাল্টা হামলায় জবাব দেয় পাকিস্তানও। 

উত্তেজনা তুঙ্গে পৌঁছার আগে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের মধ্যস্থতায় দুই পক্ষ যুদ্ধবিরতিতে পৌঁছায়। তবে এরই মধ্যে সিন্ধুর পানি চুক্তি স্থগিত করে ভারত। পাকিস্তান সিমলা চুক্তি স্থগিত করে। এছাড়া আকাশসীমা বন্ধ রাখাসহ বেশ কয়েকটি পাল্টাপাল্টি পদক্ষেপে যায় দুই দেশ।

মাসুদুজ্জামান