যুক্তরাষ্ট্রে বিদেশি শিক্ষার্থীদের ভিসা ইন্টারভিউ অনির্দিষ্টকালের জন্য স্থগিত

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রশাসন যুক্তরাষ্ট্রে বিদেশি শিক্ষার্থীদের জন্য ভিসা ইন্টারভিউ নির্ধারণ বন্ধের নির্দেশ দিয়েছে এবং সেই সঙ্গে সামাজিক মাধ্যম যাচাইয়ের প্রক্রিয়া আরও জোরদার করার পরিকল্পনা নিয়েছে। একটি কূটনৈতিক স্মারকলিপিতে মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও জানিয়েছেন, নতুন নির্দেশনা না আসা পর্যন্ত এই প্রক্রিয়া স্থগিত থাকবে।

এই বার্তায় বলা হয়েছে, শিক্ষার্থী এবং বিদেশি বিনিময় ভিসার জন্য সামাজিক মাধ্যম যাচাইয়ের প্রক্রিয়া আরও কঠোর করা হবে, যা বিশ্বব্যাপী মার্কিন দূতাবাস ও কনস্যুলেটগুলোর ওপর বড় প্রভাব ফেলবে।

এমন এক সময়ে এই সিদ্ধান্ত এসেছে, যখন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প যুক্তরাষ্ট্রের শীর্ষস্থানীয় কিছু বিশ্ববিদ্যালয়ের বিরুদ্ধে ক্ষোভ প্রকাশ করছেন, যাদের তিনি বামপন্থী হিসেবে বিবেচনা করেন। তার মতে, এসব প্রতিষ্ঠান ক্যাম্পাসে ইহুদিবিরোধিতা এবং বৈষম্যমূলক ভর্তি নীতিকে সহায়তা করছে।

বিবিসির মার্কিন অংশীদার সিবিএস নিউজের হাতে আসা এক কূটনৈতিক তারবার্তায় বলা হয়েছে, মঙ্গলবার (২৭ মে) থেকেই যেসব শিক্ষার্থীদের ভিসা ইন্টারভিউ এখনো নির্ধারিত হয়নি, তাদের অ্যাপয়েন্টমেন্ট বাতিল করতে বলা হয়েছে। তবে যাদের আগে থেকেই নির্ধারিত সাক্ষাৎকার রয়েছে, তারা তাদের প্রক্রিয়া চালিয়ে যেতে পারবে।

আরও পড়ুনঃ ইসরায়েলের ভয়াবহ হামলায় গাজায় একদিনেই নিহত ৮১, মোট প্রাণহানি ৫৪ হাজার ছুঁইছুঁই

স্মারকলিপিতে আরও বলা হয়েছে, সকল শিক্ষার্থী ভিসা আবেদনকারীদের জন্য সামাজিক মাধ্যম যাচাই ও স্ক্রিনিং প্রক্রিয়া বাড়ানো হচ্ছে। তবে এই যাচাই কীভাবে পরিচালিত হবে, তা বিস্তারিতভাবে উল্লেখ করা হয়নি।

এদিকে মার্কিন পররাষ্ট্র দফতরের মুখপাত্র ট্যামি ব্রুস মঙ্গলবার সাংবাদিকদের বলেন, “কে আমাদের দেশে প্রবেশ করবে, সে বিষয়ে আমরা অত্যন্ত গুরুত্ব সহকারে যাচাই করি এবং এই প্রক্রিয়া অব্যাহত থাকবে।”

এর আগে ট্রাম্প প্রশাসন শত শত মিলিয়ন ডলারের বিশ্ববিদ্যালয় অনুদান স্থগিত করেছে, শিক্ষার্থীদের দেশে ফেরত পাঠানোর উদ্যোগ নিয়েছে এবং বহু ভিসা বাতিল করেছে—যদিও আদালত অনেক সিদ্ধান্ত স্থগিত করেছে।

হোয়াইট হাউজ কিছু বিশ্ববিদ্যালয়কে অভিযোগ করেছে, তারা ফিলিস্তিনপন্থী বিক্ষোভের আড়ালে ইহুদিবিরোধিতাকে প্রশ্রয় দিচ্ছে। অন্যদিকে, বিশ্ববিদ্যালয়গুলো বলছে, ট্রাম্প প্রশাসন শিক্ষার্থীদের বাকস্বাধীনতার ওপর হস্তক্ষেপ করছে।

হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয় ট্রাম্প প্রশাসনের অন্যতম প্রধান লক্ষ্যবস্তু হয়ে উঠেছে। গত সপ্তাহে প্রশাসন বিশ্ববিদ্যালয়টির আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থী ভর্তি ও গবেষক হোস্ট করার ক্ষমতা প্রত্যাহার করেছিল, যা পরে একজন ফেডারেল বিচারক স্থগিত করেন।

মাসুদুজ্জামান