রেকর্ডসংখ্যক অভিবাসনপ্রত্যাশীর মৃত্যু ২০২৪ সালে
২০২৪ সাল বিশ্বজুড়ে অভিবাসনপ্রত্যাশীদের জন্য ভয়াবহ এক বছর হিসেবে চিহ্নিত হয়েছে। জাতিসংঘের অভিবাসন সংস্থা ইন্টারন্যাশনাল অর্গানাইজেশন ফর মাইগ্রেশন (আইওএম) এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, এই বছর বিপদসঙ্কুল পথে পাড়ি দিতে গিয়ে নিহত হয়েছেন রেকর্ডসংখ্যক অভিবাসনপ্রত্যাশী। আইওএমের মতে, ২০২৪ সালে অন্তত ৮,৯৩৮ জন মানুষ অভিবাসনের পথে মৃত্যুবরণ করেছেন, যা এক বছরে সর্বোচ্চ সংখ্যা।
আইওএম জানিয়েছে, মৃত্যুর বেশিরভাগ ঘটনাই ঘটেছে ভূমধ্যসাগরের বিপজ্জনক পথ ধরে এশিয়া ও আফ্রিকার উপকূল থেকে ইউরোপে যাওয়ার সময়। এছাড়া, অন্যান্য অভিবাসন রুটেও মৃত্যুর হার ছিল আগের বছরের তুলনায় অনেক বেশি।
শুধু দুর্ঘটনা নয়, সহিংসতাও অভিবাসনপ্রত্যাশীদের মৃত্যুর অন্যতম কারণ। সংস্থাটির তথ্য অনুযায়ী, নিহতদের অন্তত ১০ শতাংশ গুলিবিদ্ধ, ছুরিকাঘাত কিংবা মারধরের শিকার হয়েছেন। অনেক ক্ষেত্রেই এসব সহিংসতা চালিয়েছে রাষ্ট্রীয় বাহিনী।
আরও পড়ুনঃ ইসরায়েলে হুতিদের ক্ষেপণাস্ত্র হামলা
এছাড়া বিশ্বের বিভিন্ন দেশেই অভিবাসনপ্রত্যাশীদের বিরুদ্ধে সহিংসতা বেড়েছে। আইওএমের এক মুখপাত্র জানিয়েছেন, ইরান, মিয়ানমার, বাংলাদেশ এবং মেক্সিকোতে এ ধরনের সহিংসতার ফলে সবচেয়ে বেশি মৃত্যু ঘটেছে। তবে কারা এই হত্যাকাণ্ডের জন্য সরাসরি দায়ী, সে বিষয়ে বিস্তারিত কিছু জানায়নি সংস্থাটি।
আইওএমের মহাপরিচালক উগোশি ড্যানিয়েলস এক বিবৃতিতে বলেছেন, “বিশ্বজুড়ে অভিবাসনপ্রত্যাশীদের মৃত্যুর সংখ্যা বাড়ছে, যা আমাদের জন্য একটি কঠিন বার্তা। এই সংকট মোকাবিলায় আন্তর্জাতিকভাবে কার্যকর নীতি গ্রহণ করা জরুরি। আমরা চাই না, আরও মানুষ এভাবে প্রাণ হারাক।”
বিশ্বজুড়ে যুদ্ধ, দারিদ্র্য ও বৈষম্যের কারণে প্রতি বছর লাখো মানুষ নিরাপদ জীবনের আশায় নতুন দেশে পাড়ি জমাতে চান। কিন্তু অনিরাপদ রুট, মানবপাচার চক্র ও রাষ্ট্রীয় সহিংসতা অভিবাসনকে আরও বিপজ্জনক করে তুলেছে। আইওএমের আহ্বান অনুযায়ী, এই সংকট সমাধানে বিশ্বনেতাদের দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়া প্রয়োজন।
>