শিক্ষাবর্ষের প্রথম দিনেই বই সঙ্কট: সুনামগঞ্জসহ দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে শিক্ষার্থীদের বইপ্রাপ্তি অসম্পূর্ণ
নতুন শিক্ষাবর্ষের প্রথম দিনেই সুনামগঞ্জসহ দেশের বিভিন্ন জেলায় প্রাথমিক ও মাধ্যমিক স্তরের শিক্ষার্থীরা নির্ধারিত বই হাতে পায়নি। সুনামগঞ্জে মাধ্যমিক স্তরের জন্য প্রয়োজনীয় সাড়ে ৩৩ লাখ বইয়ের একটিও সোমবার পর্যন্ত পৌঁছায়নি। প্রাথমিকে কিছু বই পৌঁছালেও চতুর্থ ও পঞ্চম শ্রেণির কোনো বই সরবরাহ করা হয়নি।
- সুনামগঞ্জ: মাধ্যমিক স্তরে প্রয়োজন ৩৩ লাখ বই; এখনও কোনো বই পৌঁছায়নি। প্রাথমিকে চাহিদা ১৫ লাখ, পাওয়া গেছে মাত্র ৭ লাখ।
- নেত্রকোনা: মাধ্যমিক স্তরে ৩০ লাখ বই প্রয়োজন, সরবরাহ মাত্র ১৫ হাজার।
জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ড (এনসিটিবি) জানিয়েছিল, প্রথম দিনে প্রতিটি শিক্ষার্থীর হাতে অন্তত তিনটি বই (বাংলা, ইংরেজি, গণিত) দেওয়ার পরিকল্পনা ছিল। কিন্তু এ লক্ষ্যমাত্রাও পূরণ করা সম্ভব হয়নি। আগস্টে রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের ফলে শিক্ষাক্রম বদল এবং নতুন চাহিদা অনুযায়ী বই পরিমার্জন করায় সময়ক্ষেপণ হয়েছে।
প্রাথমিক ও মাধ্যমিক স্তরে নতুন শিক্ষাক্রম বাতিল করে পুরোনো শিক্ষাক্রমে ফেরা হয়েছে। এ কারণে ৪৪১টি পাঠ্যবই পরিমার্জন করতে হয়, যা ছাপার কাজকে বিলম্বিত করেছে।
- প্রাক্-প্রাথমিক থেকে পঞ্চম শ্রেণি: প্রয়োজন ৯ কোটি ৬৪ লাখ বই; বিতরণ ছাড়পত্র হয়েছে ৩ কোটি ৯৪ লাখ বইয়ের।
- মাধ্যমিক স্তর: প্রয়োজন ৩০ কোটি ৯৬ লাখ বই; ছাড়পত্র হয়েছে ২ কোটি ৮ লাখ ২৪ হাজার বইয়ের।
- অনেক বই এখনো উপজেলায় পৌঁছায়নি।
এনসিটিবি চেয়ারম্যান অধ্যাপক এ কে এম রিয়াজুল হাসান জানিয়েছেন, প্রথম দিনে প্রতিটি বিদ্যালয়ে অন্তত একটি শ্রেণির শিক্ষার্থীদের বই পৌঁছানোর চেষ্টা চলছে। তিনি আশা প্রকাশ করেন, ২০ জানুয়ারির মধ্যে সব শিক্ষার্থী বই পেয়ে যাবে, যদি কাগজের সংকট না হয়।
দরপত্র ও চুক্তি প্রক্রিয়ায় বিলম্ব: নতুন দরপত্র আহ্বান এবং পরিদর্শন প্রতিষ্ঠানের চূড়ান্তকরণে সময়ক্ষেপণ।
মুদ্রণকারীদের সঙ্গে দেরিতে চুক্তি: চুক্তির পর ৪০ দিনের মধ্যে বই ছাপার নিয়ম থাকলেও দেরি হওয়ায় সরবরাহে ধীরগতি।
কাগজের সংকট: ছাপার জন্য প্রয়োজনীয় কাগজের সরবরাহেও সমস্যা দেখা দিয়েছে।
এ বছর সব বই শিক্ষার্থীদের হাতে পৌঁছাতে ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হতে পারে। তবে এনসিটিবি কর্তৃপক্ষ সঙ্কট নিরসনে দ্রুত পদক্ষেপ গ্রহণের প্রতিশ্রুতি দিয়েছে।
>