শেষ ইচ্ছায় মানবতার বার্তা, গাজার শিশুদের চিকিৎসা সেবায় নিজের গাড়ি দিলেন পোপ

বিশ্বজুড়ে পরিচিত ছিলেন মানবতা, শান্তি ও ন্যায়ের প্রতীক হিসেবে। প্রয়াত ক্যাথলিক ধর্মগুরু পোপ ফ্রান্সিস তার জীবনের শেষ অধ্যায়েও রেখে গেলেন এক মানবিক বার্তা। নিজের ব্যবহৃত গাড়িকে গাজার অবরুদ্ধ শিশুদের জন্য ভ্রাম্যমাণ ক্লিনিকে রূপান্তরের ইচ্ছা প্রকাশ করেছিলেন তিনি—একটি এমন সিদ্ধান্ত, যা শুধু একটি যান নয়, বরং বিশ্বের নির্যাতিত শিশুদের প্রতি সহানুভূতির একটি প্রতীক হয়ে উঠেছে।

রোববার (৪ মে) সুইডেনের কারিতাস সংস্থার মহাসচিব পিটার ব্রুন এবং জেরুজালেমের মানবাধিকারকর্মী আন্তন সাফারের সমন্বয়ে পরিচালিত এই প্রকল্পের ঘোষণা দেয়া হয়েছে। সুইডিশ টেলিভিশনে সম্প্রচারিত প্রতিবেদন অনুযায়ী, পোপ নিজেই এক সময় বলেছিলেন—”যদি এটি (গাড়ি) গাজার শিশুদের কাজে আসে, তবে সেটিই হোক এর পরিণতি।” এ মন্তব্যই তার শেষ ইচ্ছার ভিত্তি। গাজায় চলমান যুদ্ধ ও মানবিক বিপর্যয়ের প্রেক্ষাপটে, তিনি মনে করতেন, এমন একটি প্রতীকী এবং কার্যকর উদ্যোগ গাজাবাসীদের প্রতি বিশ্বের এক ধরনের সংবেদনশীল বার্তা পৌঁছে দেবে।

আরও পড়ুনঃ ইসরায়েল ২০টি যুদ্ধবিমান দিয়ে হামলা চালালো ইয়েমেনে

প্রকল্পের অংশ হিসেবে, পোপের গাড়িটিকে চিকিৎসা সরঞ্জামে সজ্জিত করে একটি প্রতিরক্ষামূলক মোড়কে রূপান্তর করা হচ্ছে, যাতে তা নিরাপদে অবরুদ্ধ এলাকায় কাজ করতে পারে। এটি গাজার ভেতরে শিশুদের কাছে পৌঁছবে, যাদের অনেকেই এখন প্রয়োজনীয় চিকিৎসা সেবা থেকে বঞ্চিত। পিটার ব্রুন বলেন, “এটি শুধু একটি যান নয়, এটি একটি বার্তা—বিশ্ব এখনো গাজার শিশুদের কথা মনে রেখেছে।” যদিও বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে আছে গাজায় প্রবেশের নিষেধাজ্ঞা ও দীর্ঘদিনের অবরোধ, তবুও কারিতাস জেরুজালেম মাঠ পর্যায়ের কর্মসূচি চালিয়ে যাচ্ছে।

পোপ ফ্রান্সিস ২১ এপ্রিল মৃত্যুবরণ করেন, যিনি তার মেয়াদকালে বহুবার ফিলিস্তিনিদের অধিকার, যুদ্ধবিরতির আহ্বান ও মানবিক সহায়তার পক্ষে কথা বলেছেন। তার মৃত্যুর পর ফিলিস্তিনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় তাকে ‘শান্তির দূত’ ও ‘বিশ্বস্ত বন্ধু’ হিসেবে শ্রদ্ধা জানিয়েছে। আজ তার গাড়িটি গাজার শিশুদের জীবনে আশার আলো হয়ে ওঠার পথে—একজন আধ্যাত্মিক নেতার জীবনের মানবিক উত্তরাধিকার।

রোজিনা