সন্তানের সঙ্গে নিয়ম করে লুকোচুরি খেলা মনের বিকাশে সাহায্য করে

ছোটবেলায় টুকি বা লুকোচুরি খেলতেন তো? কাউকে হারিয়ে ফেলে আবার খুঁজে পাওয়ায় যে আনন্দ, তা এই খেলা দিয়েই বোঝা যেত! কিন্তু জানেন কি, সামান্য ওই খেলার মাধ্যমেই আপনার মস্তিষ্ক বিকাশের সুযোগ পেয়েছে? তাই শত ব্যস্ততার মাঝেও নিজের সন্তানের সঙ্গেও টুকি বা লুকোচুরি খেলবেন। চিকিৎসকেরা ‘পিকাবু’ খেলার পরামর্শ দেন শিশুদের সঙ্গে।

টুকি বলুন বা লুকোচুরি, অথবা পিকাবু, এই খেলার অনেক উপকারিতা রয়েছে। যা সহজে চোখে পড়ে না। নীরবে সাহায্য করতে পারে। নিছক খেলা নয়। এতেই লুকিয়ে সুস্থতার চাবিকাঠি।

১) অনেক শিশুর মধ্যে দেখা যায়, সামাজিক পরিসরে ঠিক করে মিশতে পারছে না। না তারা কথা বলে, না হাসালে হাসে। সেক্ষেত্রে চিকিৎসক এই খেলাটি খেলার পরামর্শ দেন। এর ফলে অন্য একটি মানুষের সঙ্গে বোঝাপড়া করে, সমন্বয় রেখে চলার প্রশিক্ষণ হয়। এই খেলা মস্তিষ্ককে সক্রিয় রাখতে পারে।

আরও পড়ুনঃ সেরা ১০টি গন্তব্যে ঘুরতে যেতে পারেন গাড়ি চালিয়ে

২) টুকি খেলতে খেলতে শিশুর মনে বিস্ময় তৈরি হতে থাকে। সে বোঝার চেষ্টা করে, সামনের মানুষটি কী করবেন এর পর। অন্যের মন বুঝে চলার ক্ষমতা তৈরি হয় শিশুদের মধ্যে। এর মাধ্যমে অনেক সময়ে নিজেকে অন্যের জায়গায় বসিয়ে ভাবার চেষ্টাও করে ছোটরা। তাই এই খেলা খুবই উপকারী।

৩) কোনো বস্তু, কোনো মানুষ চোখের সামনে না থাকলেও তারা যে ফিরে আসতে পারে, এই ভরসার জায়গা তৈরি করা দরকার শিশুদের মনে। মা-বাবা কাজে গেলেও চিন্তার কিছু নেই, তারা ঠিক ফিরে আসবেন, এই ধারণা তৈরির জন্য টুকি বা লুকোচুরির মতো খেলা খুব দরকারি। অনেক ক্ষেত্রে বাবা-মায়েদের বিবাহবিচ্ছেদের সঙ্গে মানিয়ে নেয়ার ক্ষেত্রেও এই ধরনের খেলা সাহায্য করে। শিশুদের মনে আস্থা তৈরি হয়। আলাদা হয়ে যাওয়া নিয়ে আতঙ্ক কমাতে পারে লুকোচুরি বা টুকি খেলা।

চিকিৎসক বলছেন, ‘‘অন্য মানুষের সঙ্গে সম্পর্ক গড়ে তোলা বা অন্যকে খুশি করার চেষ্টা করা, বা অন্যকে কষ্ট না দিয়ে কথা বলা, এই ধরনের আচরণ তৈরি করার জন্য পিকাবুর মতো বিভিন্ন খেলাধুলোর পরামর্শ দিয়ে থাকি আমাদের রোগীদের। যে শিশুদের কথা বলার সমস্যা রয়েছে, বা অটিজ়ম স্পেকট্রাম ডিজঅর্ডার (সামাজিক পরিবেশে কথা বলতে না পারা, একই কাজ বার বার করতে থাকা, মেলামেশা করতে না পারা) রয়েছে, তাদের জন্য এই খেলা বেশি কার্যকরী।’’

রোজিনা