হামজার দুর্দান্ত পারফরম্যান্স, গোল ও জয়ে উল্লাসে দেশ
দেশের ফুটবলে এক জোয়ার এসেছে। যার নাম হামজা দেওয়ান চৌধুরী। ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগে খেলার অভিজ্ঞতা সম্পন্ন এই ফুটবলারের ঘরের মাঠে অভিষেক হয়েছে। ভুটানের বিপক্ষে ম্যাচ দিয়ে নবরূপে ফিরেছে ঢাকা জাতীয় স্টেডিয়ামও। কানায় কানায় দর্শক ভরা ম্যাচে গোলও করেছেন হামজা। বাংলাদেশ ফুটবল ভেসেছে ২-০ গোলে জয়ের জোয়ারে।
ডিফেন্সিভ মিডফিল্ডার হামজা চৌধুরী। তার কাজ বল দখল করা, ট্যাকল করা। ম্যাচ নিয়ন্ত্রণে সহায়তা করা এবং ভালো কিছু পাস দেওয়া। ম্যাচ শুরু হতেই হামজা বল পুনরুদ্ধার করে ও ভালো একটা পাস দিয়ে গ্যালারিতে উচ্ছ্বাসের ঢেউ তোলেন। গ্যালারিতে ঢোকা ভক্তরা আসন খুঁজে বসার আগে কিংবা টিভি দর্শকরা নড়েচড়ে বসতে না বসতেই উচ্ছ্বাস দ্বিগুন করেন বাংলাদেশের জার্সিতে দ্বিতীয় ম্যাচ খেলতে নামা এই ইংলিশ প্রবাসী।
ম্যাচের ৬ মিনিটে চোখ ধাঁধানো এক গোলে অন্যদের সঙ্গে পার্থক্য বুঝিয়ে দেন ৫ ফিট ১০ ইঞ্চি উচ্চতার এই মিডফিল্ডার। জামাল ভূঁইয়ার কর্ণার কিক বক্সের ঠিক মাঝ বরাবর যায়। হামজা লাফিয়ে কপালের মাঝ বরাবর নিঁখুত হেডে জালে পাঠিয়ে দেন বল। বাংলাদেশ ম্যাচে ১-০ গোলের লিড নেয়।
আরও পড়ুনঃ হামজা আসতেই ফুটবল নিয়ে ভক্ত-সমর্থকদের বাড়ল আগ্রহ
এমনটা যেন সিনেমায় দেখা যায়। নাম ভূমিকায় অভিনয় করছেন নায়ক। নায়কোচিত সব কার্যক্রমে নামের স্বার্থকতার প্রমাণ দিচ্ছেন। হামজাও সেটাই করেছেন। ভুটানের বিপক্ষে ম্যাচটা যে হামজারই ম্যাচ। হামজা স্টেডিয়ামে ঢুকতেই, মাঠে নামতেই গ্যালারি থেকে যেমন স্লোগন ওঠে, তেমনি ব্যানারও দেখা যায় তার নামে। গোল করে নিজেকে নায়ক হিসেবেই প্রমাণ করেন তিনি।
ম্যাচের প্রথমার্ধে নজর ছিল বাংলাদেশের আরও একজনে। তিনি সৌদির ক্যাম্প থেকে বাদ পড়ে ইতালিতে ফেরত যাওয়া ফাহমিদুল ইসলাম। লেফট উইঙ্গে খেলা এই তরুণ অভিষেকে খারাপ করেননি। ভালো কটা পাস দিতে দেখা গেছে তাকে। প্রথমার্ধে গোলের দারুণ একটা সুুযোগও তৈরি করেন। হারানো বল ফিরে পেতে সর্বোচ্চ চেষ্টাও দিয়েছেন। তবে মানিয়ে নিতে কিছুটা ভুগতেও দেখা গেছে তাকে।
দ্বিতীয়ার্ধের শুরুতে হামজা-জামালসহ তিন পরিবর্তন আনেন বাংলাদেশ কোচ হাভিয়ের ক্যাবরেরা। মাঠে নামান শেখ মোরসালিন ও ইব্রাহিমকে। প্রথমার্ধে ছন্নছাড়া ভুটানকে দ্বিতীয়ার্ধের শুরুতেই দ্বিতীয় গোল দেয় লাল-সবুজের প্রতিনিধিরা। বক্সের বাহির থেকে সোহেল রানার জোরের ওপর নেওয়া শট জালে জড়ালে উল্লাসে মাতেন স্বাগতিকরা।
ভুটান যেন এরপর টের পায় কিংবা বুঝিয়ে দেয় হামজা থাকা ও না থাকার পার্থক্য। দ্বিতীয়ার্ধে তারা কিছুটা বলের দখল পায়। পাল্টা আক্রমণ তোলার চেষ্টা করে। শেষ বাঁশির আগে গোল দেয়ার সুযোগও পেয়ে যায়। কিন্তু গোলরক্ষক মিতুল মারমা নিজের গোলবার অক্ষত রাখার দায়িত্ব পালন করেন। ফিরিয়ে দেন ম্যাচে ভুটানের নেয়া সেরা ও শেষ সুযোগ। এই ম্যাচ দিয়ে বাংলাদেশ ১০ জুন সিঙ্গাপুরের বিপক্ষে এএফসি চ্যাম্পিয়নশিপের বাছাইপর্বের প্রস্তুতি সারল।
>