আদালত এখন বেনজিরের ফ্ল্যাট, প্লট, জমির জন্য রিসিভার নিয়োগ করছে
ঢাকার একটি আদালত বৃহস্পতিবার পুলিশের সাবেক মহাপরিদর্শক (আইজিপি) বেনজীর আহমেদ ও তার পরিবারের ছয়টি ফ্ল্যাট, পাঁচটি প্লট, দুটি অফিস স্পেস এবং ২৫ একর জমি দেখাশোনার জন্য রিসিভার নিয়োগের নির্দেশ দিয়েছেন।
দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) করা আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ঢাকা মহানগর দায়রা জজ মোহাম্মদ আস-শামস জগলুল হোসেন এ আদেশ দেন বলে জানিয়েছেন দুদকের আইনজীবী মাহমুদ হোসেন জাহাঙ্গীর।
তিনি বলেন, তারা ঢাকা ও নারায়ণগঞ্জে বেনজীরের সম্পত্তির রিসিভার হিসেবে দুদকের পরিচালক (অ্যাসেট ম্যানেজমেন্ট) এবং বান্দরবানের সম্পত্তির জন্য জেলা প্রশাসক নিয়োগের জন্য আদালতের কাছে আবেদন করেছেন।
বেনজিরের স্থাবর সম্পত্তির মধ্যে রয়েছে নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জে ২৪ কাঠা জমি, উত্তরায় ৩ কাঠা জমি, বাড্ডায় ১৩ দশমিক ৬৬ কাঠা জমির ওপর নির্মিত ভবনে দুটি ফ্ল্যাট এবং বান্দরবান জেলায় ২৫ একর জমি (লিজ)। এ ছাড়া ঢাকার আদাবরে পিসিকালচার হাউজিং এলাকায় বেনজিরের স্ত্রী জিশান মির্জার নামে ছয়টি ফ্ল্যাট রয়েছে।
১২ জুন একই আদালত এসব সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করার নির্দেশ দেন।
এর আগে ৬ জুন দুই দফায় বাজেয়াপ্ত আদেশের পর সাবেক আইজিপির স্থাবর সম্পত্তি দেখাশোনার জন্য রিসিভার নিয়োগ দেন আদালত।
23 মে বিচারক মোহাম্মদ আস-শামস জগলুল হোসেন 83টি দলিলের অধীনে 345 বিঘা (114 একর) জমি বাজেয়াপ্ত করার এবং বেনজির ও তার পরিবারের সদস্যদের 33টি ব্যাংক অ্যাকাউন্ট জব্দ করার আদেশ দেন।
২৬ মে একই আদালত বেনজির ও তার পরিবারের সদস্যদের আরও ১১৯টি দলিলের জমি, ২৩টি কোম্পানির শেয়ার এবং গুলশানে চারটি ফ্ল্যাট বাজেয়াপ্ত করার নির্দেশ দেন।
দুদককে ১৯টি ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানের শেয়ার, তিনটি বিও অ্যাকাউন্ট এবং ৩০ লাখ টাকার সঞ্চয়পত্র বাজেয়াপ্ত করতে বলা হয়।
12 জুন, আদালত সাবেক পুলিশ প্রধান, তার স্ত্রী এবং তাদের কন্যাদের মালিকানাধীন আরও আটটি ফ্ল্যাট, পোশাক কারখানার শেয়ার এবং অন্যান্য জমির সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করার নির্দেশ দেন।
কালের কণ্ঠ এবং ডেইলি সান এপ্রিলের প্রথম দিকে বেনজীর আহমেদ এবং তার পরিবারের সদস্যদের অবৈধ উপায়ে অর্জিত সম্পদ ও সম্পত্তির বিবরণ দিয়ে একটি সিরিজ প্রতিবেদন প্রকাশ করে যা সারা দেশে ব্যাপক আলোচনার জন্ম দেয়।
সাবেক আইজিপির বিরুদ্ধে ক্ষমতার অপব্যবহার করে বিপুল অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগের তদন্ত চেয়ে দুদকের দ্বারস্থ হয়েছেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী সৈয়দ সায়েদুল হক সুমন।
পরে দুই মাসের মধ্যে সাবেক আইজিপি ও তার পরিবারের কথিত অবৈধ সম্পদের তদন্তের অগ্রগতি প্রতিবেদন দুদককে দিতে বলেন হাইকোর্ট।
২২ এপ্রিল দুদক গণমাধ্যমকে জানায়, সাবেক আইজিপির বিরুদ্ধে ক্ষমতার অপব্যবহার করে বিপুল অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগ তদন্তের জন্য উপ-পরিচালক মোঃ হাফিজুল ইসলামের নেতৃত্বে তিন সদস্যের একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে।
দুর্নীতির অভিযোগের তদন্তের মধ্যেই বেনজির ও তার পরিবারের সদস্যরা ৪ মে দেশ ত্যাগ করেন।
>