বেনাপোল বন্দরে দফায় দফায় তল্লাশি: যাত্রীদের হয়রানির অভিযোগ
যশোরের বেনাপোল স্থলবন্দরে যাত্রীদের দফায় দফায় তল্লাশি এবং অতিরিক্ত অর্থ নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। বিদেশি নাগরিক থেকে শুরু করে বাংলাদেশি যাত্রীদের কাছ থেকেও নিয়ম বহির্ভূতভাবে টাকা আদায়ের ঘটনা ঘটছে বলে জানা গেছে।
টাকার বিনিময়ে ব্যাগ তল্লাশি এড়ানোর অভিযোগ
গত রোববার সরেজমিনে দেখা গেছে, বিদেশি নাগরিকদের এমবারকেশন কার্ড পূরণ করিয়ে “এন্ট্রি ফি” হিসেবে টাকা নেওয়া হচ্ছে। এমনকি, ব্যাগ তল্লাশি এড়াতে পুলিশ সদস্যদের হাতে ১০০ থেকে ২০০ টাকা পর্যন্ত দিতে বাধ্য হচ্ছেন যাত্রীরা।
একজন ভারতীয় নাগরিক শেখ হাসানুজ্জামান অভিযোগ করেন, শূন্যরেখা পেরিয়ে বেনাপোল ইমিগ্রেশনে পৌঁছানোর পর ২০০ টাকা “এন্ট্রি ফি” নেওয়া হয়, যার বিপরীতে কোনো রসিদ দেওয়া হয়নি।
নারায়ণগঞ্জের বাসিন্দা রবিউল রনি জানান, তাদের দলের একজনকে ১০০ টাকা দিতে বাধ্য করা হয়, এবং অন্য একজন ভারতীয় মুদ্রায় ৫০ রুপি দিয়ে ছাড়া পান।
দফায় দফায় তল্লাশির চিত্র
বেনাপোল ইমিগ্রেশনে যাত্রীরা পাঁচ ধাপে তল্লাশির সম্মুখীন হচ্ছেন:
- শূন্যরেখায় বিজিবি সদস্যদের প্রথম স্ক্যান।
- ইমিগ্রেশনে দ্বিতীয়বার ব্যাগ স্ক্যান।
- তৃতীয় ধাপে ইমিগ্রেশন পুলিশ কর্তৃক পাসপোর্ট ও ব্যাগ তল্লাশি।
- প্যাসেঞ্জার টার্মিনাল থেকে বের হওয়ার সময় বিজিবি সদস্যদের ব্যাগ তল্লাশি।
- আমড়াখালী বাঁশকলে বিজিবির চূড়ান্ত তল্লাশি।
কর্তৃপক্ষের প্রতিক্রিয়া
বেনাপোল ইমিগ্রেশনের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ইমতিয়াজ মো. আহসানুল কাদের ভূঞা জানান, টাকার বিনিময়ে কোনো কার্যক্রম হওয়ার কথা নয়। অভিযোগ খতিয়ে দেখা হবে।
বেনাপোল কাস্টমস হাউসের কমিশনার কামরুজ্জামান দাবি করেন, কাস্টমসের তল্লাশি বৈধ হলেও বিজিবির এমন কার্যক্রম আইনগতভাবে ভিত্তিহীন।
৪৯ বিজিবির অধিনায়ক লে. কর্নেল সাইফুল্লাহ সিদ্দিকী বলেন, “সীমান্তে চোরাচালান রোধে তল্লাশি প্রয়োজন। তবে এটি আরও সহনশীল করার চেষ্টা করা হচ্ছে।”
স্ক্যানার মেশিনের সমস্যায় আরও ভোগান্তি
বন্দরে যাত্রীদের ব্যাগ তল্লাশির জন্য প্রয়োজনীয় স্ক্যানার যন্ত্র নেই। একটি যন্ত্র নষ্ট হয়ে থাকায় তল্লাশি প্রক্রিয়া আরও দীর্ঘায়িত হচ্ছে। যদিও এই যন্ত্র মেরামতের নির্দেশ ১১ দিন আগেই দেওয়া হয়েছিল, তবে এখনও তা কার্যকর হয়নি।
>