অনুমোদন ছাড়াই অবৈধভাবে তোলা হচ্ছে নদীর বালু
হবিগঞ্জের আজমিরীগঞ্জ উপজেলার বদলপুর ইউনিয়নের পিটুয়ারকান্দি গ্রামের পাশ দিয়ে বয়ে গেছে কালনী-কুশিয়ারা নদী। বেশ কিছুদিন ধরে সেখান থেকে বালু তুলছে একটি চক্র।
দিনে বন্ধ থাকলেও রাত ঘনিয়ে এলেই তাদের খননযন্ত্র (ড্রেজার) চালু হয়। অবাধে তাদের বালু তোলার কারণে পিটুয়ারকান্দি গ্রামসহ আশপাশের এলাকা ভাঙনঝুঁকিতে পড়েছে। এলাকাবাসী দ্রুত সময়ের মধ্যে এ বিষয়ে ব্যবস্থা নিতে প্রশাসনের কাছে দাবি জানিয়েছেন।
সম্প্রতি ওই এলাকায় গিয়ে জানা গেছে, কালনী-কুশিয়ারা নদীতে বেশ কিছুদিন আগে ড্রেজারটি স্থাপন করেন একই উপজেলার নোয়াগাঁও গ্রামের বাসিন্দা ও বালু ব্যবসায়ী সোহেল মিয়া। সেখান থেকে বালু তুলে জেলার অন্য জায়গায় বিক্রি করছেন। টাকার বিনিময়ে তার এ কাজে মদদ দিচ্ছে স্থানীয় একটি চক্র।
এদিকে কামরুল মিয়া নামের স্থানীয় এক বাসিন্দা বলেন, সোহেল দীর্ঘদিন ধরে কালনী-কুশিয়ারা নদী থেকে অবৈধভাবে বালু তুলে আসছেন। এ কারণে নদী তীরের অনেক জায়গায় ফাটল ধরেছে। পিটুয়ারকান্দি গ্রামের অনেকেরই ফসলি জমি নদীতে বিলীন হতে পারে। এ বিষয়ে প্রশাসনকে দ্রুত পদক্ষেপ নিতে হবে।
আরও পড়ুনঃ ফেটে চৌচির শুষ্ক জমি, ঝলসে যাচ্ছে ফসল
নদী তীরে জমি রয়েছে কালাম মিয়ার। তার জমির পাশে বালু তোলার গর্ত। এ কারণে কালামের জমি ভাঙনের মুখে। তিনি বলেন, ক্রমাগত নদী থেকে বালু তোলায় তীরের ফসলি জমি ঝুঁকিতে পড়েছে। বালু তুলতে তুলতে নদীর তলদেশে বিশাল গর্ত সৃষ্টি হয়েছে। এতে করে যে কোনো সময় তীর ধসের আশঙ্কা রয়েছে।
এছাড়া একই গ্রামের নাইম মিয়া বলেন, গ্রামবাসী ভাঙনের আতঙ্কে রয়েছে। কিন্তু সোহেল মিয়াসহ বালু উত্তোলনকারী চক্রটি প্রভাবশালী। যে কারণে তাদের বিরুদ্ধে এলাকার বেশির ভাগ মানুষই মুখ খুলতে সাহস পায় না। তাদের বিরুদ্ধে দ্রুত আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানান তিনি।
বালু তোলার জন্য প্রশাসন থেকে অনুমতি না নেওয়ার বিষয়টি স্বীকার করেন সোহেল মিয়া। তার দাবি, ‘স্লুইসগেটে বালু দেওয়ার জন্যই মূলত নদী থেকে বালু উত্তোলন করছিলাম। এখন আর বালু তুলছি না।’
পিটুয়ারকান্দি গ্রামের বাসিন্দা ও স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) সদস্য ইউসুফ মিয়া বলেন, ‘আমরা চাই নদী থেকে অবৈধভাবে বালু তোলা বন্ধ হোক। দু-একজন মানুষের (সুবিধার) জন্য যেন পুরো গ্রামের ক্ষতি না হয়।’
আজমিরীগঞ্জের উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) নিবিড় রঞ্জন তালুকদারের ভাষ্য, অবৈধভাবে বালু উত্তোলনকারী যিনিই হোন না কেন, তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। কাউকে ছাড় দেওয়া হবে না।
>