সুপার ওভারে নিয়ে পাকিস্তানকে হারাল যুক্তরাষ্ট্র
পাকিস্তান-যুক্তরাষ্ট্রের ম্যাচ যাবে সুপার ওভারে! সেই ম্যাচে আবার পাকিস্তানকে হারিয়ে রূপকথার জন্ম দেবে যুক্তরাষ্ট্র! কে জানত যুক্তরাষ্ট্রের ডালাসের গ্র্যান্ড প্রেইরি স্টেডিয়ামে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের মঞ্চে এমন নাটকীয় ক্রিকেটের প্রদর্শনী হবে?
আগে ব্যাট করা পাকিস্তানের ৭ উইকেটে ১৫৯ রানের জবাবে যুক্তরাষ্ট্রের সমীকরণটা শেষ ওভারে এসে দাঁড়ায় ১৫ রানে। শেষ বলে জিততে যুক্তরাষ্ট্রের দরকার ছিল ৫ রান। পাকিস্তানের পেসার হারিস রউফের করা সেই বলে স্ট্রাইকে থাকা নিতিশ কুমার চার মারলে ম্যাচ যায় সুপার ওভারে।
যেখানে অ্যারন জোন্স ও হারমিত সিংয়ের সামনে এলোমেলো বোলিং করে ১৮ রান দিয়ে বসেন অভিজ্ঞ মোহাম্মদ আমির। যুক্তরাষ্ট্রের বাঁহাতি পেসার সৌরভ নেত্রবালকারের জন্য এ রান যথেষ্ট ছিল। সুপার ওভারে ১৯ রানের লক্ষ্যে পাকিস্তান ১ উইকেট হারিয়ে করেছে ১৩ রান। পাকিস্তানের পক্ষে সুপার ওভারে ব্যাট করেছেন ইফতেখার আহমেদ, ফখর জামান ও শাদাব খান।
ডালাসের গ্র্যান্ড প্রেইরি ক্রিকেট স্টেডিয়ামে যুক্তরাষ্ট্র এবারের টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের উদ্বোধনী ম্যাচে কানাডার ১৯৪ রান তাড়া করেছে ১৭.৪ ওভারে। কিন্তু আজ প্রতিপক্ষ ছিল পাকিস্তান। যে দলের একাদশ সেজেছে শাহিন শাহ আফ্রিদি, নাসিম শাহ, হারিস রউফ এবং অভিজ্ঞ মোহাম্মদ আমিরে, সঙ্গে শাদাব খানের লেগ স্পিন। এই বোলিং আক্রমণের জন্য ১৫৯ রান যথেষ্টই হওয়ার কথা। কিন্তু তা আর হলো কই!
রান তাড়ায় পাওয়ার প্লেতে ওপেনার স্টিভেন টেলর ১২ রান করে আউট হলেও পাওয়ার প্লেতে ৪৪ রান পেয়ে যায় যুক্তরাষ্ট্র। অধিনায়ক ও ওপেনার মোনাঙ্ক প্যাটেল আর তিনে নামা আন্দ্রিস গুস মিলে পার করেন শাহিন, আমির ও নাসিমের প্রথম স্পেল। তিন তারকা পেসারের প্রথম স্পেলে ঝুঁকি না নিয়ে ঠিক সময়ে বাউন্ডারি খুঁজে নিয়ে আস্কিং রান রেট নাগালে রেখেছেন তাঁরা। মাঝের ওভারে হারিসের প্রথম স্পেলেও দুজনের জুটি ভাঙেনি।
সে জন্য অপেক্ষা করতে হয় ১৪তম ওভার পর্যন্ত। হারিস দ্বিতীয় স্পেলে এসে ২৬ বলে ৫টি চার ও ১টি ছক্কায় ৩৫ রান করা গুসের স্টাম্প ভাঙেন। ৪৮ বলে ৬৮ রানের জুটিও ভাঙে এতে। পরের ওভারে এসে ৩৪ বলে অর্ধশত করে এগোতে থাকা মোনাঙ্ককে কট বিহাইন্ডের ফাঁদে ফেলেন আমির। ৩৮ বলে ৭টি চার ও ১টি ছক্কায় ৫০ রানেই থামে তাঁর ইনিংস।
তখনো যুক্তরাষ্ট্রের জয়ের জন্য দরকার ৩৫ বলে ৪৯ রান। ক্রিজে তখন যুক্তরাষ্ট্রের আগের ম্যাচের জয়ের নায়ক অ্যারন জোন্স, তাঁর সঙ্গী ছিলেন নিতিশ কুমার। দুজনে মিলে ম্যাচটাকে নিয়ে যান সুপার ওভারে। জোন্স ২৬ বলে ২টি চার ও ২টি ছক্কায় ৩৬ রানে অপরাজিত ছিলেন, নিতিশ ১৪ বলে করেছেন অপরাজিত ১৪ রান। নিতিশের ইনিংসের একমাত্র বাউন্ডারিটি আসে শেষ বলে, যার সৌজন্যে ম্যাচটাকে সুপার ওভারে নিয়ে যায় যুক্তরাষ্ট্র।
এর আগে ডালাসের সকালের কন্ডিশনে যুক্তরাষ্ট্রের অধিনায়ক মোনাঙ্ক টসে জিতে পাকিস্তানকে ব্যাটিংয়ের আমন্ত্রণ জানান, সুফল পেতেও দেরি হয়নি। ২৬ রানে ৩ উইকেট হারিয়ে বসে পাকিস্তান। তবে শাদাব, বাবর আজমের পর আফ্রিদির সৌজন্যে শেষ পর্যন্ত ৭ উইকেটে ১৫৯ রান করে পাকিস্তান।
শুরুর ধাক্কার পর পাকিস্তানকে টেনে তোলেন অধিনায়ক বাবর ও শাদাব। দুজনের ৪৮ বলে ৭২ রানের জুটি পাকিস্তানকে শুরুর ধাক্কা সামলে নিতে সাহায্য করে। তবে দুজনের একজনও শেষ পর্যন্ত টিকে থাকতে পারেননি। শাদাব ২৫ বলে ৪০ রান করে আউট হন, বাবর ৪৪ রান করেছেন ৪৩ বলে।
এই ইনিংসের সৌজন্যে আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টির সর্বোচ্চ রানের তালিকায় বিরাট কোহলিকে (৪০৩৮) ছাড়িয়ে যান বাবর (৪০৬৭)। শেষের দিকে আফ্রিদির ১৬ বলে ২৩ রান পাকিস্তানকে নিয়ে যায় দেড় শ’র ওপারে। যুক্তরাষ্ট্রের হয়ে সর্বোচ্চ ৩ উইকেট নিয়েছেন বাঁহাতি স্পিনার নোশতুশ কেনিজিগে, বাঁহাতি পেসার সৌরভ নেত্রবালকারের শিকার ২ উইকেট।